রায়হান আহমেদ : চুনারুঘাট উপজেলার সর্বত্র প্রযুক্তির আড়ালে হারিয়ে গেছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য কৃষকের লাঙ্গল, গরু-মহিষ ও জোয়াল দিয়ে জমি চাষাবাদ। চলমান ইরি-বোরো মৌসুমেও গরু-নাঙ্গল দিয়ে চাষাবাদ দেখা যায়নি বললেই চলে।
এ অঞ্চলের কৃষক বা জমির মালিকদের জমি চাষাবাদে গ্রামীণ ঐতিহ্য ও চিরায়ত পদ্ধতি ছিলো গরু, মহিষ, জোয়াল ও নাঙ্গল দিয়ে জমি চাষাবাদ। এক সময় এটি ছিলো কৃষকদের অনেক উপকারী এক পদ্ধতি। কারণ, লাঙ্গলের ফলা কিংবা ঈশ জমির অনেক গভীর অংশ আলগা করে আনতো। গরু পায়ের চটার কারণে জমিতে কাঁদা সৃষ্টি এবং গরুর গোবর জমিতে জৈব সার হিসাবে ব্যবহার হতো। কিন্তু কালের বিবর্তনে বর্তমান প্রযুক্তির আধুনিকতায় হারিয়ে গেছে গ্রাম বাংলার এ ঐতিহ্য চাষাবাদ পদ্ধতিটি। বর্তমানে বিজ্ঞানের নতুন নতুন কৃষি সরঞ্জাম আবিস্কারের ফলে এ অঞ্চলের কৃষকদের জীবনে এসেছে নানা পরিবর্তন। আর সেই পরিবর্তনের ছোয়া লেগেছে এ অঞ্চলের কৃষি বিপ্লবে। তাই প্রতিনিয়ত সকালে আর ওদের গরু, লাঙ্গল-জোয়াল নিয়ে মাঠে যেতে দেখা যায় না।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, এ অঞ্চলের কৃষি প্রধান এলাকাগুলো শতাব্দির পর শতাব্দির ঐতিহ্য ধরে রেখেছিলো কৃষকের গরু, লাঙ্গল-জোয়াল দিয়ে জমি চাষাবাদ। সহজ ও সময় কম লাগার কারণে গরু দিয়ে হালচাষের পরিবর্তে এখন ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলারসহ নানাহ রকম কৃষি সরঞ্জাম দিয়ে জমি চাষ করা হচ্ছে। ইদানীং ধান কাটা ও মাড়াইয়ের মেশিন কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার সকলের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ফলে বর্তমানে দিনমজুর শ্রেণির মানুষ অন্য পেশায় ঝুঁকছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহিদুল ইসলাম বলেন, “একই জমিতে ফসলের নিবিড়তা বাড়ানোর জন্য এবং বাণিজ্যিক লাভজনক চাষাবাদের জন্য কৃষি যান্ত্রিকীকরণের বিকল্প নাই। বর্তমানে ফসলের উৎপাদন খরচ কমানো এবং শ্রমিকদের উপর নির্ভরশীলতা কমাতে কৃষক ভাইয়েরা আধুনিক কৃষি যন্ত্র যেমন- কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার, রিপার, ধান রোপণ যন্ত্র, ট্রাক্টর, ড্রায়ার মেশিন ইত্যাদি ব্যবহার করছে আর এসব যন্ত্র কৃষক ৫০-৭০% সরকারি ভর্তুকিতে পেয়ে থাকে। এমনকি বিভিন্ন ধরনের কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ফলে উৎপাদন খরচ অনেকটাই কমে গেছে।”